মৌর্য শাসনব্যবস্থা । Mauryan Administration System in bengali

মৌর্য শাসনব্যবস্থা (Mauryan Administration System)

নমস্কার বন্ধু কেমন আছো, আশা করি খুব ভালো আছো। এই পোস্টে আলোচ্য বিষয় হলো মৌর্য শাসনব্যবস্থা

কেমন ছিল প্রাচীন ভারতে মৌর্যদের শাসন পদ্ধতি ? শাসন পরিচালনার জন্য কোন কোন কর্মচারীদের নিযুক্ত করা হয়েছিল ? তাঁদের নাম কি ? এইসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে তোমাকে এই পোস্টটি অবশ্যই পড়তে হবে।

আশা রাখি এই পোস্টটি পড়ে তুমি উপকৃত হবে। তাহলে চলো দেরী না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক। 

মৌর্য শাসনব্যবস্থার উপাদান :  

মৌর্য শাসনব্যবস্থা কিভাবে পরিচালিত হত তা জানার জন্য বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। এক্ষেত্রে তিনটি উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সেগুলি হোলো গ্রীক দূত মেগাস্থিনিসের রচিত গ্রন্থ ‘ইন্ডিকার’ বিবরণ, কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র এবং সম্রাট অশোকের খোদিত লিপি, অনুশাসন

এর পাশাপাশি স্ট্র্যাবো, জাস্টিন, ডায়োডোরাস-এর  মতো গ্রীক ও রোমান লেখকদের রচিত বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থ থেকেও মৌর্য শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

তুমি কি জানো যে, মৌর্য শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। পরবর্তীকালে সম্রাট অশোক এই শাসনব্যবস্থাকে এক অন্য রূপদান করেন।

মৌর্য শাসনব্যবস্থা দুটি ভাগে বিভক্ত। সেগুলি হোলো কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা এবং প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা

কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা :    

রাজার ভূমিকা :

মৌর্য কেন্দ্রীয় শাসনের সর্বোচ্চ পদে ছিলেন রাজা। তিনি সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। সামরিক, আইন, বিচার এই প্রতিটি বিভাগের কার্যপ্রণালী কেমন হবে তা ঠিক করে দিতেন তিনি।

যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ, রাষ্ট্রের হিসাবপত্রের দেখাশোনা ও এমনকি অন্য রাষ্ট্র থেকে আসা দূতকে অভ্যর্থনা জানানোর এক্তিয়ারও ছিল রাজার।        

মৌর্য সম্রাট সর্বসাধারণের সামনে তাঁর শ্রেষ্ঠতা প্রমাণের জন্য নামের সাথে সুন্দর অভিধা ব্যবহার করতেন। যেমন  সম্রাট অশোকের নামের সাথে ‘দেবানাম প্রিয়‘ অভিধাটি যুক্ত ছিল।

দেবানাম প্রিয়-র অর্থ যিনি দেবতাদের প্রিয়। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে ও মেগাস্থিনিসের বিবরণে রাজাকে কর্তব্যপরায়ণ ও পরিশ্রমী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। 

রাজার সহযোগী রাজ কর্মচারী   

কেন্দ্রীয় শাসনের সর্বোচ্চ পদে রাজা থাকলেও তাঁকে সাহায্য করবার জন্য কিছু কর্মচারী ছিল। কৌটিল্যের মতে, যেমন একটি চাকা নিয়ে একটি গাড়ি চলতে পারে না ঠিক তেমনি রাজাও সমস্ত কাজ একা করতে পারতেন না। দরকার পড়তো বিভিন্ন কর্মচারীদের। এই কর্মচারীদের নাম ও তাঁদের কাজ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হোলো। 

অমাত্য বা সচিব 

রাজাকে শাসনকার্যে সহায়তা করতেন অমাত্য বা সচিব-রা। রাজা বিভিন্ন বিষয়ে অমাত্যদের থেকে পরামর্শ শুনতেন। অমাত্যরা ছিলেন খুবই প্রভাবশালী এবং বিচক্ষণ।

তাঁদের কাজ ছিল নৌবাহিনী-সেনাবাহিনীর প্রধান, বিচারক, প্রদেশপাল, সহকারী প্রদেশপাল প্রমুখ উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের নির্বাচন করা। এককথায় সচিব বা অমাত্যরা ছিলেন অভিজাত শাসক শ্রেণী। 

মন্ত্রিন 

সচিবদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন ‘মন্ত্রিন’ বা মন্ত্রীরা। রাষ্ট্রের ভেতরে বা রাষ্ট্রের বাইরে কোনো বিশেষ নীতি নির্ধারণের বিষয়ে রাজা মন্ত্রিনদের থেকে শলাপরামর্শ নিতেন।

মন্ত্রিনদের অধীনে বারো জন অমাত্য নিয়ে একটি মন্ত্রীপরিষদ ছিল। কোনো জরুরী অবস্থা দেখা দিলে রাজা মন্ত্রিপরিষদের সাথে পরামর্শ করতেন।

যদিও এই পরামর্শ গ্রহণ ছিল রাজার ইচ্ছার অধীন। অর্থশাস্ত্র থেকে জানা যায়, মন্ত্রিনদের বছরে বেতন ছিল ৪৮ হাজার পণ রুপা বা তামার মুদ্রা। আর মন্ত্রিপরিষদের ব্যক্তিদের বেতন ছিল ১২ হাজার পণ রুপা বা তামার মুদ্রা।

আরও পড়ো : মৌর্য যুগের শিল্পকলা

সমাহর্তা ও সন্নিধাতৃ   

মৌর্য কেন্দ্রীয় শাসনের এক গুরুত্বপূর্ণ পদ হলো ‘সমাহর্তা’ ও ‘সন্নিধাতৃ’। সমাহর্তা ও সন্নিধাতৃ-রা ছিলেন অমাত্য শ্রেণীর। অমাত্যদের মধ্যে যাঁরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে পরীক্ষায় সফল হতেন তাঁরাই এইসমস্ত পদের দাবীদার হতেন।

সমা হর্তাদের কাজ ছিল খনি, সেচ, বন প্রভৃতি থেকে আসা রাজস্ব আদায়ের তদারকি করা। অপরদিকে সন্নিধাতৃদের ওপর দায়িত্ব থাকতো রাজকোষের ভার সামলানোর। 

এই দুই অমাত্য শ্রেণীকে একসাথে বলা হতো ‘অর্থপধাশুদ্ধ ‘। এর অর্থ হলো যাঁরা কিনা টাকা পয়সা সংক্রান্ত পরীক্ষায় সফল হয়ে এই পদের দাবীদার হয়েছেন। 

 অধ্যক্ষ 

অধ্যক্ষ বলতে ভারপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাকে বোঝায়। মৌর্য শাসনব্যবস্থায় ‘অধ্যক্ষ’ নামে একশ্রেণীর কর্মচারীর উল্লেখ পাওয়া যায়। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে ৩২ জন অধ্যক্ষ-র নাম পাওয়া গেছে।

এঁরা ছিলেন যেমন-নগরাধ্যক্ষ (নগর শাসনের ভারপ্রাপ্ত ), বলাধ্যক্ষ (সামরিক বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত ), মুদ্রাধ্যক্ষ (মুদ্রা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ), নাব্যাধ্যক্ষ (নৌবাহিনীর ভারপ্রাপ্ত ), দুর্গপাল ইত্যাদি।

অধ্যক্ষ-র তালিকা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, মৌর্য শাসনব্যবস্থায় সমস্ত দিকের ওপর লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। 

পরিদর্শক

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হওয়া বিভিন্ন ঘটনার খবরাখবর রাজাকে গোপনে জানানোর কাজে নিযুক্ত ছিলেন ‘পরিদর্শক’ নামক কর্মচারীরা।  

পতিবেদক

‘পতিবেদক’ ছিলেন গুপ্তচর শ্রেণীর কর্মচারী। এঁরা সম্রাটের নির্দেশে গুপ্তচরবৃত্তির কাজ করতো। 

পুরোহিত 

পুরোহিতরা রাজাকে বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করতেন। রাষ্ট্রের কল্যাণ, বিভিন্ন দুর্যোগ দূর করা  ইত্যাদির বিষয়ে যে পূজা-অর্চনার অনুষ্ঠান করা হতো তাঁর সর্বেসর্বা ছিলেন তাঁরা। জানা যায় যে, পুরোহিতরা উচ্চশ্রেণীর কর্মচারীদের সমান বেতন পেতেন। 

প্রাদেশিক শাসন : 

আশা করি মৌর্য কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে তুমি বুঝতে পেরেছো। এইবার আলোচনা করবো মৌর্য প্রাদেশিক শাসন সম্পর্কে। মৌর্য শাসন কেন্দ্রীভূত হওয়া সত্বেও, প্রাদেশিকও ছিল। বিভিন্ন উপাদান, অশোকের শিলালেখ থেকে মৌর্য প্রাদেশিক শাসনের কথা জানা গেছে। 

মৌর্য প্রদেশ 

সুশাসনের জন্য মৌর্য সাম্রাজ্য প্রদেশে বিভক্ত ছিল। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমল থেকেই মৌর্য সাম্রাজ্য প্রদেশে বিভক্ত হয়েছিল।

সম্রাট অশোকের আমলের শিলালেখ থেকে প্রদেশগুলির নাম ভালোভাবে জানা যায়।

প্রদেশের সংখ্যা ছিল পাঁচটি। সেগুলি হলো- উত্তরাপথ (রাজধানী ছিল তক্ষশীলা ), দক্ষিণাপথ (রাজধানী ছিল সুবর্ণগিরি; বর্তমান মহীশূর ), অবন্তি (রাজধানী ছিল উজ্জয়িনী ), প্রাচ্য (রাজধানী ছিল পাটলিপুত্র ), কলিঙ্গ (রাজধানী ছিল তোসলি )।

প্রদেশের শাসনকর্তা  

উপরে যে প্রদেশগুলির নাম দেওয়া হয়েছে সেগুলির শাসনকর্তা ছিলেন ‘কুমার‘ ও ‘আর্যপুত্র‘ নামে শাসকেরা। কুমার, আর্যপুত্র বলতে যুবরাজ বা রাজকুমারকে বোঝায়।

তাই এর থেকে সহজেই বলা যেতে পারে রাজকুমার বা যুবরাজগন প্রদেশগুলিকে শাসন করতেন। 

মহামাত্র  

প্রদেশের শাসনকর্তাদের কাজে সাহায্য করতেন ‘মহামাত্র‘ নামে কর্মচারীরা। এছাড়াও মহামাত্রদের কাজ ছিল সীমান্ত সংলগ্ন এবং সীমান্তের ওপারে থাকা মানুষদের সাথে সুসম্পর্ক ও শান্তি বজায় রাখা। 

অহল বা অহাল  

প্রদেশের ঠিক পরের স্তরটি ছিল ‘অহল‘ বা ‘অহাল‘। বিভিন্ন শিলালেখতে এর সাথে ‘আহার’ নামটিও পাওয়া গেছে। যাই হোক এই সবগুলি নামের অর্থ হলো জেলা। জেলাগুলির শাসন পরিচালনা করতো প্রাদেশিক-রা। 

রজুক বা রজ্জুক 

কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে রজ্জু নামক একটি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ হলো জমি পরিমাপ বা জমির রাজস্ব। তাই বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, ‘রজুক’ বা ‘রজ্জুক’-এর কাজ ছিল জমির রাজস্ব সংগ্রহ করা।

সম্রাট অশোকের আমলে রজুকদের কাজে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। জমির পরিমাপ ও রাজস্ব সংগ্রহ করার পাশাপাশি গ্রামের বিচারকার্য পরিচালনার ভারও তাঁদের দেওয়া হয়েছিল।

জনপদ  

অর্থশাস্ত্রে জনপদের কথা বলা হয়েছে। জনপদ বলতে গ্রামীণ এলাকাকেই বোঝানো হয়। জনপদগুলি শাসন করতেন রজ্জুকরা। চারধরণের জনপদের নাম অর্থশাস্ত্র থেকে জানা যায়। এগুলি হলো- স্থানীয়, দ্রোণমুখ, খার্বটিক, সংগ্রহণ। 

গ্রামিক ও গোপ

গ্রামগুলির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ‘গ্রামিক‘-দের। এই পদটি ছিল অবৈতনিক।

গ্রামের শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপন করা, চুরি-ডাকাতির থেকে গ্রামগুলিকে রক্ষার করার দায়িত্ব থাকতো গ্রামিকদের ওপর। ‘গোপ‘ নামক কর্মচারীদের স্থান ছিল গ্রামিকদের ওপরে।

গোপরা গ্রামের রাজস্ব সংক্রান্ত কাজগুলি করতো। আবার ‘স্থানিক‘ ছিলেন গোপদের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। 

নগরের শাসনব্যবস্থা 

মৌর্য আমলে গ্রামের পাশাপাশি নগরেও শাসন বলবৎ ছিল। মৌর্য আমলে নগর বলতে আমরা পাটলিপুত্র-কেই বুঝি। মেগাস্থিনিস-এর বিবরণ থেকে আমরা নগর বা পৌর শাসনের দিকটি জানতে পারি।

মেগাস্থিনিস নগরের শাসনব্যবস্থায় ৩০ জন ব্যক্তির একটি সমিতির কথা তাঁর রচনায় বলেছেন।

সমিতিটি পাঁচজন করে ব্যক্তি নিয়ে ছয়টি শাখায় বিভক্ত ছিল। যেমন- ১) শ্রম শিল্প, ২) জন্ম-মৃত্যুর হিসাব সংরক্ষণ, ৩) বিদেশীদের দেখাশোনা, ৪) ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ, ৫) শিল্পদ্রব্য বিক্রয় ব্যবস্থা, ৬) বিক্রি করা জিনিসের ওপর ১/১০ ভাগ কর আদায়।

বিচার ব্যবস্থা : 

মৌর্য যুগে বিচার ব্যবস্থা ছিল নিরপেক্ষ। বিচারের সর্বোচ্চে ছিলেন সম্রাট নিজে। বিচারে কঠোরতা ছিল প্রবল।

ধর্মাস্থ্যেও’ কণ্টকশোধন ‘ নামে দুটি আদালতের নাম অর্থশাস্ত্রে পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির অপরাধ দেখে তাঁকে কারাবাস, অঙ্গচ্ছেদ, অঙ্গ ভেঙ্গে দেওয়া, মৃত্যুদণ্ড প্রভৃতি সহ ১৮ রকমের দণ্ড দেওয়া হতো।

শাসনকার্যে যাতে অসামঞ্জস্য না ঘটে তার জন্য অশোকের আমলে বিচারের সময় ‘ব্যবহার সমতা’ এবং ‘দণ্ড সমতা’ নামে নীতি নেওয়া হয়েছিল। 

সামরিক শাসন 

নগর শাসনের মতো সামরিক শাসনেও ৫ জন করে ব্যক্তি নিয়ে গঠিত ছটি সমিতি ছিল। তাঁরা পদাতিক, অশ্বারোহী, রথ বাহিনী, হাতি বাহিনী, নৌ-বাহিনী, যোগাযোগ ও পরিবহন ক্ষেত্রের রক্ষনাবেক্ষণ করতো। বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায় যে, মৌর্যদের সামরিক বাহিনীতে ছয় লক্ষ পদাতিক, ত্রিশ হাজার অশ্বারোহী ও নয় হাজার হাতি ছিল। 

অশোকের শাসন সংস্কার

১) অশোকের আমলে রজুক, মহামাত্র প্রভৃতি নতুন শ্রেণীর কর্মচারীদের শাসনকার্যে নিযুক্ত করা হয়। 

২) ধম্ম বা ধর্ম প্রচারের জন্য অশোক ‘ধর্মমহামাত্র’ নামে এক কর্মচারী পদের সৃষ্টি করেন।

৩) বিচারে ব্যবহার সমতা ও দণ্ড সমতা নামে দুটি নীতির প্রয়োগ ঘটানো হয়। 

৪) বিচারের ক্ষেত্রে রজ্জুকদের পূর্ন স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। 

আরও পড়ো : মৌর্য সম্রাট অশোক

আশা করি এই পোস্টটি পড়ে তোমার ভালো লেগেছে। যদি তোমার কোনো মতামত থাকে তাহলে তুমি Comment করে আমাকে জানাতে পারো। আর অবশ্যই পোস্টটি  Share কোরো। তোমার মূল্যবান মতামত আমাকে লিখতে অনুপ্রেরণা যোগাবে। ভালো থেকো বন্ধু , আর ইতিহাস পড়তে থেকো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!