মীরাবাঈ (Sant Mira Bai ) ছিলেন ষোড়শ শতাব্দীর ভক্তিবাদী আন্দোলনের একজন স্মরণীয় প্রচারক। রাজপুত রাজকন্যা এবং শিশোদীয় রাজবংশের রাজবধু তিনি।
খুবই অল্প বয়স থেকেই তিনি ছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একনিষ্ঠ ভক্ত।
তাঁর কাহিনী শোনাবো, তবে তার আগে মেওয়ারের দিকে একবার চোখ রাখা যাক।
মেওয়ার মানেই সেই চিতোরগড় দুর্গ। কত ঘটনার সাক্ষী এই দুর্গটি।
রানী পদ্মিনীকে পাওয়ার জন্য আলাউদ্দিন খিলজির চিতোর আক্রমণ, জওহর ব্রতের মতো ঘটনা ইত্যাদি কতকিছুই না এখানে ঘটেছে।
কিন্তু মেবার তার নিজের স্বাধীনতা বারে বারে বজায় রেখেছে। এবার সম্রাট আকবরের পালা ছিল। তিনি চিতোরগড় অবরোধ করলেন।
চিতোরের রানা উদয় সিংহ-কে আকবর রাজত্ব সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। চিতোরের ভার জয়মাল রাথোরের হাতে থাকল।
অনায়াসে সম্রাট আকবর চিতোর জয় করে সেনাপতি আসফ খানের ওপর দুর্গের ভার দিয়ে আগ্রা ফেরত গেলেন।
রাজপুত মহিলারা ‘জওহর ব্রত‘ আর পুরুষেরা ‘সাকা ব্রত‘ বা যুদ্ধে লড়ে প্রাণ বলিদান দিয়েছিলেন। চিতোরের প্রতিটি ঘটনাই রোমহর্ষক।
এত মৃত্যু, অস্ত্রের ঝংকারের মধ্য দিয়েই জন্ম নিল এক কাহিনী। চিতোরের ( Chittor ) রাজপুরীতে এক বালিকা রাজবধু হয়ে এলেন।
সঙ্গে করে নিয়ে এলেন কৃষ্ণপ্রেম।
এই কাহিনী অসামান্য সুন্দরী কোমল বালিকা রাজবধুটির।
মীরাবাঈ কে ছিলেন
মীরাবাঈ সম্পর্কে নিপুণ কোনো তথ্যের রেকর্ড নেই। ইতিহাসবিদ, পণ্ডিতরা সেইসময়কার কাব্য, সাহিত্য ঘেঁটে যা পেয়েছেন তা থেকেই তাঁর জীবনী যতটুকু জানা গেছে।
যতদূর জানা যায় আনুমানিক ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে উত্তর পশ্চিম রাজস্থানের মেরতা-র কাছাকাছি কুরকি রাজ্যে তাঁর জন্ম হয়। কুরকি ছিল ছোট্ট রাজপুতানি রাজ্য।
কুরকি-র রাজা রতন সিং রাঠোর-এর কন্যা হলেন মীরাবাঈ। বর্তমানে এই স্থানটি রাজস্থানের পালি জেলার মধ্যে পড়ে। শিশু অবস্থা থেকেই মীরা মা-হারা।
যেহেতু রাজ পরিবারে জন্ম তাঁর, তাই সঙ্গীত, ধর্ম ইত্যাদি সব শিক্ষায় তিনি শিক্ষিত হয়েছিলেন।
পরিবার ভগবান বিষ্ণুর উপাসক হওয়ায় শৈশব থেকেই নিজের মন প্রাণ শ্রীকৃষ্ণের ( Lord Shri Krishna ) চরণে তিনি সঁপে দেন।
বিবাহ
প্রতিটি মেয়েকেই বিবাহ করে একদিন না একদিন শ্বশুরবাড়ি চলে যেতে হয়। কিন্তু তার একটা নির্দিষ্ট বয়স থাকে।
শৈশবে মীরার অমতেই মেওয়ারের রাজা সংগ্রাম সিং বা রানা সঙ্গ-র বড় ছেলে ভোজ রাজ সিং-র সাথে তাঁর বিবাহ হয়।
ভোজ রাজ সিং ছিলেন মেওয়ারের শিশোদীয় বংশের রাজা। আর মীরা কুরকির সম্ভ্রান্ত বংশের মেয়ে।
রাজবধু হয়ে পা রাখলেন বটে শিশোদীয় বংশের চৌকাঠে কিন্তু স্বামীকে গ্রহণ করতে চাননি তিনি।
যুক্তি হিসেবে বলেন শ্রীকৃষ্ণের সাথেই তাঁর বিবাহ সম্পন্ন হয়ে গেছে বহু আগেই। মীরার স্বামী ভোজ রাজ সিং মুঘলদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে আহত হন।
ক্ষতস্থানে মারাত্মক সংক্রমণের কারণে ভোজ রাজ মারা যান। এদিকে ১৫২৭ সালে খানুয়ার যুদ্ধে মুঘল সম্রাট বাবরের সাথে যুদ্ধে প্রাণ হারান শ্বশুরপিতা রানা সঙ্গ।
স্বামী-শ্বশুরকে হারিয়ে প্রায় অনাথ হয়ে গেলেন মীরাবাঈ।
শ্বশুরবাড়ির চক্রান্ত
রানা সঙ্গের মৃত্যুর পর মেবারের রাজা হন বিক্রমাদিত্য। স্বামী হারানো মীরার কৃষ্ণভক্তি নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয় মেবারের রাজপুরীর ভেতর।
তাঁকে হত্যা করার চক্রান্ত চলতে থাকে। নিয়ম করে প্রতিদিন শ্রীকৃষ্ণের পূজা সেরে মীরা চরণামৃত পান করতেন।
জানা যায় সেই চরণামৃতে বিষ মিশিয়ে তাঁকে পান করাতে চেয়েছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এমনকি পূজার জন্য রাখা ফুলের ঝুড়িতে বিষধর সাপ পর্যন্ত ঢুকিয়ে পাঠানো হয় তাঁর কাছে।
রাজপুত লোকগাথা এবং জনশ্রুতি থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায় সেই সাপ কৃষ্ণের মূর্তিতে পরিবর্তিত হয়েছিল। আবার অনেকের মতে সাপটি নাকি ফুলের মালা হয়ে যায়।
মীরাকে জলে ডুবিয়ে মারার কৌশল নেওয়া হলে সেও ব্যর্থ হয়। আসলে মনে করা হয় আরাধ্য কিষেনজী তাঁকে চক্রান্তের হাত থেকে বারবার রক্ষা করেছেন।
ভগবানের প্রতি ভক্তের এমন নিখাদ ভক্তি শ্রদ্ধায় বোধহয় ভগবানও চুপ করে বসে থাকেন না। যথাসময়ে তিনি তাঁর কাজটি করেন।
আরও পড়ুনঃ কাদম্বিনী গাঙ্গুলি ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক ও ডাক্তার
ভক্তি আন্দোলনে যোগদান
মীরার বাল্যকাল, বৈবাহিক জীবন ইত্যাদির যে তথ্য সামনে আসে তা অনেকটাই কল্পকাহিনী নির্ভর।
পরবর্তীকালে ঐতিহাসিক ন্যান্সি মারটিন তাঁকে নিয়ে গবেষণায় অনেক তথ্য দেন। ঐতিহাসিকরা মনে করে থাকেন মীরাবাঈ তাঁর সময়কালে ‘ভক্তি আন্দোলন‘ ( bhakti movement ) শুরু করেন।
সেই সময় ধর্মকে কেন্দ্র করে হিন্দু রাজা ও মুসলিম সম্রাটদের মধ্যে লড়াই বড় আকার ধারণ করে।
সুলতানি আমলে ভক্তিবাদের উদ্ভবের পিছনে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণ ছিল।
উচ্চবর্ণের হিন্দুরা নিম্নবর্ণের হিন্দুদের ঘৃণা করতেন। আবার অন্যদিকে সাধারণ মানুষদের ওপর মুসলমান শাসকদের শোষণও ছিল।
দুই মিলিয়ে নিম্নবর্গের মানুষদেরই বঞ্চনার শিকার হতে হত। মীরার মতো ভক্তিবাদী কোমল হৃদয়ের সংস্কারগণেরা ধর্মীয় ও সামাজিক সাম্যের কথা প্রচার করেন।
মীরা সহজ সরল ভাষায় গানের মধ্যে দিয়ে কৃষ্ণভক্তি প্রচার করেন নিপীড়িত মানুষের ভেতর।
গৃহত্যাগ
একদা এসেছিলেন মেবারের বালিকা রাজবধু হয়ে। শ্বশুরবাড়ির পরিবার থেকে জুটেছিল দুর্নাম। কিন্তু কৃষ্ণপ্রেম সদা অটুট ছিল।
সেই কোন বালিকা বেলায় কৃষ্ণের চরণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন মীরা।
তাঁর প্রাণের প্রিয় উপাস্য গিরিধারীলালের প্রেমে বিভোর হয়ে অবশেষে মীরা মেবার ছেড়ে তীর্থ পরিক্রমায় বেরিয়ে পড়লেন।
মীরাবাঈ সিদ্ধান্ত নেন যতদিন না কৃষ্ণের দর্শন লাভ না হবে তিনি পথে পথে ঘুরবেন। শিশোদীয় রাজবংশের ঐশ্বর্য ত্যাগ করে কৃষ্ণ প্রেমে পাগলিনী মীরা হলেন পথের ভিখারিনী।
বলা ভাল কৃষ্ণ প্রেমের ভিখারিনী।
গুরু রবিদাস ( Sant Rabidas )
শ্বশুরপিতা মুঘলদের সাথে যুদ্ধে নিহত হওয়ার পর মীরা মেবারের রানী হন। কিন্তু রানী হলেও মন যে তাঁর শুধু কৃষ্ণনাম জপছে।
জানা যায় মীরা প্রতি রাতে নিজের মহল থেকে বেরিয়ে গ্রামের এক মন্দিরে যেতেন। মন্দিরের আরাধ্য গিরিধারীর সাথে চলত গোপন অভিসার।
ঠিক যেমনটা শ্রীরাধা ও কৃষ্ণের যুগলবন্দী। গ্রামের এই মন্দিরেই মীরাবাঈ তাঁর গুরু রবিদাস-এর দেখা পান।
সন্ত রবিদাস ছিলেন বৈষ্ণবীয় ভক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। গিরিধারী সাধিকা মীরার কৃষ্ণভক্তি দেখে তিনি মোহিত হয়ে যান।
মীরাকে একটি একতারা উপহার দিয়েছিলেন, যা আমরা মীরার ছবিগুলিতে হাতে ধরে থাকা অবস্থায় দেখি। গুরুর দেওয়া একতারা বাজিয়ে মীরা সুরের সাথে গাইতেন কৃষ্ণ ভক্তির গান।
যে গানে হৃদয়ের প্রেম মাখানো থাকতো।
আরও পড়ুনঃ চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব
মীরার ভজন ( Mirabai Bhajan )
শ্রী কৃষ্ণ প্রেমের প্রতীক হিসাবেই পরিচিত। কৃষ্ণ প্রেমে মজেছিলেন স্বয়ং রাধারানী। আর মজলেন মীরা। রাধা ও মীরার দুজনেরই শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভালবাসা একেবারে বিশুদ্ধ খাঁটি।
জীবনে শত কষ্ট এলেও তাঁর কৃষ্ণ প্রেম টলেনি। শ্রী কৃষ্ণের প্রেমে পাগলিনী হয়ে সুর দিয়ে গাইতেন হৃদয়ের প্রেম উজাড় করা গান।
মীরার গানগুলি “মীরার ভজন” নামেই আমরা জানি। আবার ভজন গুলি মীরার কবিতা নামেও পরিচিত। রাজস্থানি ভাষায় ভজন গুলি রচিত হয়েছিল।
তবে হিন্দি, গুজরাটি, ব্রজবুলি ভাষার মিশ্রণও ভজনে দেখা যায়। ধারণা করা হয় প্রায় পনেরোশো ভজন মীরা রচনা করেছিলেন। এমনই কয়েকটি ভজন হল—
==>“বন্সি তু কবন গুমান ভরি, আপনে তনপর ছেদপরয়ে বালাতে বিছরি।
জাত পাত হু তোরি ময় জানু তু বনকি লকরি। মীরাকে প্রভু গিরিধর নাগর রাধাসে ঝগরি বন্সি “। ( মীরার ভজন )
==>“কোন ভরে জল যমুনা। সখীকো। বন্সি বাজাবে মোহে লিনি। হরিসঙ্গ চলো মন মোহনা।
শ্যাম হটেলে বড়ে কবটালে, হর লাই সব গালনা। কহে মীরা তুম রুপ নিহারো, তিন লোক প্রতিপালনা “। ( মীরার ভজন )
মীরাবাঈ কেন বিখ্যাত
সমালোচকদের কাজ সমালোচনা করা। ঐতিহাসিকরাও নানা যুক্তি দিয়েছেন। তবে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি অগাধ অবিচল প্রেমই মীরাবাঈকে বিখ্যাত করেছে।
ভারতের ইতিহাসে অমর করে রেখেছে তাঁকে। শৈশবে মা হারা। বাবা ও দাদুর সাহচর্যে বড় হয়েছেন তিনি।
তাঁর অমতে শৈশবেই মেবারের শীশোদীয় বংশের ভোজ রাজ সিং-র সাথে বিবাহ দেয় পরিবার।
শ্বশুরবাড়িতে ধন দৌলত, মণি-মাণিক্য, রাজরানির আসন চাইলে সবটাই মীরা অনায়াসে অধিকার করতে পারতেন। কিন্তু এর চাইতেও বড় ধন তাঁর কাছে কৃষ্ণ প্রেম।
যার জন্য সংসার ত্যাগ করতেও হয়েছিল তাঁকে। শ্বশুর রানা সঙ্গ যুদ্ধে নিহত হলে মেবারের রানী অভিষিক্তা হন তিনি।
কিন্তু প্রাণের গিরিধারীর আকর্ষণ মীরাকে প্রতি রাতে মহল থেকে টেনে নিয়ে যেত মেবারের কোনো এক মন্দিরে। সারারাত কৃষ্ণচিন্তায় বিলীন হয়ে থাকতো মীরা।
রাজপরিবারের পক্ষ থেকে জুটল দুর্নাম। এমনকি করা হল চক্রান্ত। মেবার ছেড়ে মীরা অবশেষে তীর্থ পরিক্রমায় বেরিয়ে পড়লেন।
দ্বারকা হয়ে বৃন্দাবনে পৌঁছন। মীরা তখনও কৃষ্ণ প্রেমে বিভোর। মেবারের রাজ ঐশ্বর্যের মধ্যে গিরিধারীকে খুঁজে পাননি, তাই চলে এসেছিলেন বৃন্দাবনে।
রাজপুরীর সুখ ত্যাগ করে মথুরা ও বৃন্দাবনে সাধুসঙ্গে দিন গুজরান করেন তিনি। ভালবাসা ও আত্মনিবেদন দ্বারা ঈশ্বরের সান্নিধ্য পাওয়া সম্ভব বলে মীরা মনে করতেন।
কৃষ্ণপ্রেমে পাগলিনী হয়ে হৃদয়ের প্রেম দিয়ে গেয়েছেন কৃষ্ণ ভক্তিপদাবলী বা ভজন।
জনশ্রুতি আছে ১৫৪৭ সালে কৃষ্ণ চিন্তায় বিভোর হয়ে কৃষ্ণের মূর্তিতেই বিলীন হয়ে যান মীরা।
শিখ গুরু গোবিন্দ সিং তাঁর গ্রন্থ ‘প্রেম আম্বধ পোথি‘ তে মীরাকে শ্রেষ্ঠ ভক্তিগুরুর স্থান দিয়েছেন। স্থান দিয়েছেন তাঁর ভজনকেও।
মীরাবাঈ এর মৃত্যু
মৃত্যুই জীবনের সবচাইতে সত্যি। জন্মালে মরতে হবেই। মীরার মৃত্যু কি বেদনাদায়ক হয়েছিল ? একেবারেই নয়। তাঁর নিস্পাপ মন সর্বদা কৃষ্ণ চিন্তায় ছিল মগ্ন।
রাজকন্যা রাজবধু হয়েও পথে পথে কৃষ্ণ প্রেমে পাগল হয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন তিনি তো অমর হয়েই থাকবেন। মৃত্যু যে তাঁকে ছুঁতে পারবে না।
১৫৪৭ খ্রিস্টাব্দে দ্বারকায় ভজন রত অবস্থায় কৃষ্ণের মূর্তিতেই বিলীন হয়ে যান মীরা। চিতোরের সেই বালিকা রাজবধুর সাথে আজও আমাদের আপামর ভারতবাসীর একটা নাড়ির যোগ রয়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ সুফি আন্দোলন বা সুফিবাদ সম্পর্কে জানুন
প্রিয় পাঠক/পাঠিকাদের অসংখ্য ধন্যবাদ মুল্যবান সময় দিয়ে ‘মীরাবাঈ কে ছিলেন’ পোস্টটি পড়ার জন্য। একটি অনুরোধ যদি পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই Comment এবং Share করে দেবেন। আরও জানতে iitihas.com এর পাশে থাকুন। অনেক ধন্যবাদ।
FAQ
মীরাবাঈ কে ছিলেন ?
ষোড়শ শতাব্দীর ভক্তিবাদী আন্দোলনের একজন স্মরণীয় প্রচারক ছিলেন মীরাবাঈ। রাজপুত রাজকন্যা এবং শিশোদীয় রাজবংশের রাজবধু তিনি।
মীরার ভজন কোন ভাষায় লেখা ?
ভজন গুলি মীরার কবিতা নামেও পরিচিত। রাজস্থানি ভাষায় ভজন গুলি রচিত হয়েছিল।
গিরিধারী সাধিকা কে ছিলেন ?
মীরাবাঈ ছিলেন গিরিধারী সাধিকা।