মুঘল যুগের ইতিহাসের উপাদান ( Mughal history elements in bengali )
মুঘল যুগের ইতিহাসের উপাদান ইতিহাস চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে আমরা বিভিন্ন সূত্রের ওপর নির্ভরশীল।
কিন্তু মুঘল যুগের ইতিহাসের নির্ভরযোগ্য উপাদান হোলো সাহিত্য, আত্মজীবনী, দলিল-দস্তাবেজ, পর্যটকদের বিবরণ। মুঘল যুগকে ইতিহাসচর্চার স্বর্ণযুগ বলা হয়।
১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে বাবর পানিপথের যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ভারতে মুঘল শাসনের সূচনা করেন।
এরপর ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছয়জন মুঘল সম্রাট ভারতে শাসন করেছিলেন। এই পুরো মুঘল সময়কালের একটি ইতিহাস রচিত হয়েছে।
পরবর্তীকালে মুঘল যুগের সেই ইতিহাস জানতে আমরা ইতিহাসের পাঠকরা প্রচন্ড কৌতূহলী। কারণ এযুগের ইতিহাস সচেতনতা অনেক গভীর।
মুঘল যুগের বিভিন্ন আত্মজীবনী, সাহিত্য, স্মৃতিকথা ইত্যাদি উপাদানগুলি ইতিহাসকে করেছে সমৃদ্ধ।
ইতিহাসে এসেছে বৈচিত্র্য। তাইতো আধুনিক ঐতিহাসিকরা মুঘল যুগের ইতিহাস চর্চার ওপর জোর দিয়েছেন।
মুঘল যুগের ভারতের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক জীবনের উজ্জ্বল চিত্র এযুগের ইতিহাস চর্চার উপাদানে নিহিত রয়েছে।
তাই সেই ইতিহাসকে একবার ঘেঁটে নিজেদের জ্ঞানের পরিধি বরং বাড়িয়ে নেওয়া যাক।
মুঘল যুগের ইতিহাসের উপাদানগুলোকে কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। এগুলি হোলো- সাহিত্যিক উপাদান, সরকারি নির্দেশনামা ও দলিলপত্র, ইউরোপীয় পর্যটকদের বিবরণ, মুঘল মুদ্রা ও শিল্পকলা।
সাহিত্যিক উপাদান
১) আত্মজীবনী বা জীবনচরিত
আত্মজীবনী রচনায় মুঘল সম্রাটরা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। মুঘল যুগের অনবদ্য সৃষ্টি এগুলি।
মুঘল সাম্রাটদের আত্মজীবনী বা জীবনচরিত গুলো সাহিত্যিক উপাদান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। তাই এইযুগের সম্পর্কে বহু তথ্য জীবনচরিত রচনা থেকে পাওয়া যায়।
তুর্কি ভাষায় রচিত মুঘল যুগের স্থপতি জহিরুদ্দিন মহম্মদ বাবরের আত্মজীবনী ‘তুজুক-ই-বাবরী‘ মুঘল যুগের প্রথম অনবদ্য সৃষ্টি।
বাবরের এই আত্মজীবনীতে বাবরের খোলামেলা মনের পরিচয়, তীক্ষ্নবোধ, দক্ষতা, সেইসময়ের ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিবরণ পাওয়া যায়।
এছাড়াও এই গ্রন্থটিতে ভারতের জীবজন্তু, ফলফুল, নদনদী, বৃক্ষসহ ভৌগোলিক বিবরণ তিনি বিশদভাবে দিয়েছেন।
১৫৮৭ খ্রিস্টাব্দে বাবর কন্যা গুলবদন বেগম ফারসি ভাষায় রচনা করেছিলেন ‘হুমায়ুননামা‘। এই গ্রন্থটি মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের আত্মজীবনী।
হুমায়ুনের ব্যক্তিজীবন এবং মুঘল হারেমের ইতিহাস জানার জন্য প্রথম শ্রেণীর ঐতিহাসিক গ্রন্থ এটি।
হুমায়ুনের যুদ্ধজয়, পরাজয়, জীবনের কষ্টের দিনগুলির কথা, নিজের ভাইদের সাথে তিক্ত সম্পর্কের কথা আত্মজীবনীটিতে বর্ণনা করেছেন গুলবদন বেগম।
মুঘল নারী হিসেবে এই ইতিহাস চর্চা গুলবদন বেগমকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। পরিপূর্ণ হয়েছে মুঘল সংস্কৃতি। মুঘল সম্রাট আকবর যিনি শ্রেষ্ঠ মুঘল সম্রাট রূপে পরিচিত হয়ে আছেন।
আকবর সম্বন্ধে আবুল ফজল রচনা করেছিলেন ‘আকবরনামা‘ ও ‘আইন-ই-আকবরী‘ নামক আকবরের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ।
আবুল ফজল ও আব্দুল হামিদ লাহোরী ছিলেন মুঘল যুগের শ্রেষ্ঠ দুজন ঐতিহাসিক। এরমধ্যে আবুল ফজল ছিলেন আকবরের অন্তরঙ্গ বনধু, গুণগ্রাহী ও একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারী।
এই গ্রন্থদুটিতে আকবরের রাজত্বকালের যাবতীয় বিবরণ তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। গ্রন্থদুটিকে মুঘল ইতিহাসের বিশদ তথ্যপূর্ণ জ্ঞানকোষ বলা চলে।
আরও পড়ুন : মহীশূর রাজ্যের উত্থান
সম্রাট জাহাঙ্গীরের নিজের লেখা ‘তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী‘ গ্রন্থটি মুঘল ইতিহাসের অমূল্য সম্পদ। এই গ্রন্থটি থেকে জাহাঙ্গীরের রাজত্বের প্রতিটি দিক, তাঁর সাহিত্যচর্চা, শিল্পকলা সম্পর্কে বহু তথ্য জানা যায়।
আব্দুল হামিদ লাহোরী রচিত ‘পাদশাহনামা‘ থেকে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের আমলের বহু ঘটনার ইতিহাস আমরা জানতে পারি।
মুঘল যুগের এই প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ সম্রাট শাহজাহানের শাসনকালের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন।
মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব ব্যক্তিগত ইতিহাস রচনা পছন্দ না করলেও কাফী খাঁ রচিত ‘মুস্তাখাব-উল-লুবাব‘ থেকে তাঁর রাজত্বের বিবরণ পাওয়া যায়।
অপর গ্রন্থ শাকি মুস্তাদ রচিত সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আত্মজীবনী ‘মাসীর-ই-আলমগীরী‘ ঔরঙ্গজেবের রাজত্বের বহু ঘটনার সাক্ষী।
২) আঞ্চলিক ইতিহাস গ্রন্থ
আত্মজীবনীর পাশাপাশি আঞ্চলিক ইতিহাস গ্রন্থগুলিও মুঘল যুগের ইতিহাস জানতে কাজে আসে। আর এই আঞ্চলিক ইতিহাস গ্রন্থের প্রাচুর্য্য প্রচুর।
কিন্তু এই অল্প পরিসরে হয়তো সে আলোচনা সম্ভব নয়। তবুও কিছুটা তুলে ধরা হোলো।
দাক্ষিণাত্য বরাবরই মুঘল যুগে চর্চায় থেকেছে। সেই দাক্ষিণাত্যের মুঘল ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে হবিবুল্লাহ রচিত ‘তারিখ-ই-মহম্মদ কুতুবশাহী ‘ ঐতিহাসিক তথ্য সমৃদ্ধ।
জহুর-বিন-জহুরী রচিত ‘মহম্মদনামা ‘ বিজাপুরের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক তথ্য দেয়। জাহাঙ্গীরের রাজত্বে রচিত ‘তারিখ-ই-মাসুমী ‘ পশ্চিম ভারতের ইতিহাস জানার আকর গ্রন্থ।
গুজরাটের ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে ১৬১৩ খ্রিস্টাব্দে লিখিত ‘মিরাত-ই-সিকান্দারি ‘, ‘মিরাত-ই-আহম্মদী ‘, ‘তারিখ-ই-গুজরাত ‘, অতি মূল্যবান গ্রন্থাবলী। মুঘল যুগের বাংলার ইতিহাস জানার গ্রন্থগুলির উল্লেখ প্রয়োজন।
এগুলি হোলো, সিতাব খান রচিত ‘বাহারিস্তান-ই-ঘাইবি ‘, সলিমুল্লাহ রচিত ‘তারিখ-ই-বাঙ্গালা ‘ ইত্যাদি।
অন্যদিকে কাশ্মীরের ইতিহাস জানার জন্য বাবরের জ্ঞাতিভাই মির্জা হায়দার দুখলাত রচিত ‘তারিখ-ই-রশিদী ‘ মহামূল্যবান গ্রন্থ।
তৎকালীন মুঘল ভারতের সঠিক তথ্য পরিবেশন করার জন্যই এই আঞ্চলিক গ্রন্থগুলি ঐতিহাসিক মহলে সমাদৃত হয়েছে।
৩) সংস্কৃত ও অন্য ভাষায় লিখিত গ্রন্থ
মুঘল যুগে সাহিত্য ও ইতিহাস ধর্মী গ্রন্থগুলি মূলত ফারসি ভাষায় লেখা। কিন্তু তা বলে সংস্কৃত, বাংলা, হিন্দি ও অন্যান্য ভাষায় এযুগের উপকরণ ছড়িয়ে নেই একথা বলা যাবে না।
মুঘল সম্রাটরা ফার্সি ভাষার সাথে এই ভাষাগুলিকেও প্রাধান্য দিয়েছেন।
মহেশ ঠাকুরের সংস্কৃত ভাষায় লেখা ‘আকবরনামা ‘, পদ্মসুন্দরের লেখা ‘আকবরশাহী-সিঙ্গার দর্পণ ‘, ‘ভানুচন্দ্রচরিত ‘ আকবরের রাজত্বকাল সম্পর্কে উপযুক্ত তথ্য দেয়।
রাজকবি জগন্নাথ পন্ডিতের ‘আসফ-বিলাস ‘, ‘ভামিনী-বিলাস ‘, ‘গঙ্গা-লাহারী ‘র মতো সংস্কৃত গ্রন্থ মুঘল যুগের ইতিহাস জানতে সহায়তা করে।
হিন্দি ভাষায় লিখিত ঐতিহাসিক উপাদানের মধ্যেও অনেক গ্রন্থ রয়েছে।
যেমন বিকানিরের রাজকুমার দলপত সিংহের ‘দলপত বিলাস ‘, কেশবদাসের ‘বারসিংহ-দেবচরিত ‘, ‘জাহাঙ্গীর-চন্দ্রিকি ‘ ইত্যাদি।
মুঘল সম্রাট আকবর, জাহাঙ্গীর, শাহজাহানের আমলের লেখক বারাণসী দাস রচিত ‘অর্ধকথা ‘ মুঘল যুগের বিভিন্ন তথ্য জানার ক্ষেত্রে মহামূল্যবান দলিল।
আরও পড়ুন : রণজিৎ সিংহের কৃতিত্ব
বঙ্গদেশে এইসময় বাংলায় লেখা হয়েছিল একেকটি মূল্যবান গ্রন্থ। কবিকঙ্কন মুকুন্দরামের ‘চন্ডীমঙ্গল ‘, কৃষ্ণদাস কবিরাজের ‘চৈতন্য চরিতামৃত ‘, ‘চৈতন্যমঙ্গল ‘ গ্রন্থগুলি এযুগের বিভিন্ন ঘটনার তথ্যে পরিপূর্ণ।
সরকারি দলিলপত্র
সরকারি দলিলপত্র, নির্দেশনামা মুঘল ইতিহাস জানবার অন্যতম উপাদান।
তৎকালীন সময়ে মুঘল সম্রাটদের প্রদত্ত ফরমান সরকারি দলিল-দস্তাবেজ রূপে ইতিহাসে ঠাঁই পেয়েছে। এই দলিলগুলি সেসময়কার ইতিহাসের সাক্ষীবহন করছে।
মুঘল ইতিহাসের সরকারি ফরমান, সরকারি কাগজপত্র, দলিলপত্র, দরবারী চিঠিপত্র আধুনিক ইতিহাসের পরিচয় দেয়।
মুঘল রাজস্ব বিধি ও হিসাবপত্রের পরিসংখ্যান জানা যায় ‘দস্তুর-উল-আমল ‘ নামক গ্রন্থ থেকে।
সম্রাটের দরবারের খবরাখবর জানবার ক্ষেত্রে ‘আকভারাত-ই-দরবার-ই-মুঅল্ল ‘ গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। এছাড়া চিঠিপত্র সম্বলিত উপাদানের মধ্যে ‘ইনসা”, ‘মকতুবাত ‘, ‘রুকাত ‘-এর মতো দলিল-দস্তাবেজ ভারত ইতিহাসের মহামূল্য সম্পদ।
বর্তমানে এগুলির অধিকাংশই নষ্ট হতে বসেছে। তবুও যেটুকু টিকে আছে সেগুলি মণি মুক্তার মতোই মূল্যবান। তাই আজও এই সরকারি নথিপত্রগুলির গুরুত্ব আধুনিক ঐতিহাসিক-গবেষকদের কাছে অপরিসীম।
ইউরোপীয় পর্যটকদের বিবরণ
বিদেশী ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের আগমন ঘটেছিল মুঘল যুগের ভারতবর্ষে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ইউরোপীয় পর্যটকরা ভ্রমণবৃত্তান্ত লিখেছিলেন।
এই ইউরোপীয় পর্যটকদের বিবরণ মূল্যবান মণিমাণিক্যের সমান।
সম্রাট আকবরের আমলে আগত রালফ ফিচ নামক ইংরেজ পরিভ্রমণকারী দীর্ঘদিন ভারত ভ্রমণ করে মানুষজনের জীবনের প্রতিচ্ছবির বর্ণনা দিয়েছেন।
জাহাঙ্গীরের আমলে উইলিয়াম হকিন্স ভারত পরিদর্শনে আসেন সুরাটে বাণিজ্যকুঠি স্থাপনের উদ্দেশ্যে।
তিনি সম্রাট জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠ মিত্রতে পরিণত হয়ে সম্রাটের ব্যক্তিগত জীবনের অসামান্য চিত্র এঁকেছেন। সেই চিত্রই জীবন্ত হয়েছে ইতিহাসের পাতায়।
হকিন্সের পর স্যার টমাস রো জাহাঙ্গীরের দরবারে এসেছিলেন। টমাস রো-র বিবরণ ইতিহাসের অন্যতম লিখিত দলিল।
এরপর একে একে এসেছিলেন পিয়েত্রে দেল্লা ভাল্লে, এফ. পেলসার্ট, ডে -লায়েট প্রমুখ ইউরোপীয় পর্যটকগণ। এঁরা নিজেদের বিবরণ দ্বারা ইতিহাসের পরিধি বাড়িয়েছেন।
শাহজাহানের রাজত্বকালে আগত ফরাসি পর্যটক জহুরী ট্যাভার্নিয়ে ও চিকিৎসক বার্নিয়ের ভ্রমণ বৃত্তান্ত মুঘল ব্যবস্থার নিখুঁত ছবি তুলে ধরে।
ঔরঙ্গজেবের আমলে ইতালীয় পর্যটক মানুচি অসামান্য ভ্রমণবৃত্তান্ত লিখে মুঘল ইতিহাসের মান বাড়িয়েছেন।
এই প্রত্যেক পর্যটকগণ নিজেদের অনুসন্ধানী দৃষ্টি দিয়ে মুঘল রাজদরবার থেকে বাজারঘাট পর্যন্ত সবকিছু লক্ষ্য করেছেন। তারপর সেগুলিকে লিপিবদ্ধ করেছেন।
মুঘলদের রাজস্বব্যবস্থা, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা, শিল্পকলা, আমোদ-বিলাস সমস্তকিছুর বর্ণনা তাঁদের কলমের ডগায় ফুটে উঠেছে। তাইতো এঁদের বিবরণ ইতিহাসের উপাদান হিসেবে খুবই সহায়ক।
মুঘল যুগের মুদ্রাব্যবস্থা ও শিল্পকলা
ভারতে মুঘল শাসনকালে মুদ্রা নির্ভর অর্থনীতির সূচনা হয়েছিল। মুঘল সম্রাটরা বহু রকমের মুদ্রা ভারতে প্রচলন করেছিলেন।
আকারে বড়ো ও ভারী স্বর্ণমুদ্রা বা মোহর ছিল মুঘলদের ঐশ্বর্য ও সম্ভ্রমের প্রতীক। বাবর ও হুমায়ুনের প্রচলন করা রুপার মুদ্রার নাম ছিল শাহরুখী বা দিরহাম।
মুদ্রাতে খোদিত থাকতো সম্রাটের নাম ও তারিখ। আকবরের রাজস্বমন্ত্রী টোডরমলের সহযোগিতায় আকবর মুদ্রা ব্যবস্থায় সংস্কার করেছিলেন।
মুঘলদের চালু করা মূল্যবান, বিশুদ্ধ স্বর্ণমুদ্রাগুলি থেকে তৎকালীন সময়ের ধাতুর মান সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ হয়।
আকবর প্রচলিত মুদ্রাতে অঙ্কিত রাম-সীতার চিত্র থেকে আকবরের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার দিকটি জানা যায়।
জাহাঙ্গীর, শাহজাহান এঁদের আমলেরও মুদ্রাগুলির ওজনের মান ও বিশুদ্ধতা সেসময়কার ভারতের মজবুত অর্থনৈতিক স্থিতির জানান দেয়।
মুঘল শিল্পকলা ছিল বেশ উঁচুমানের।
মুঘলদের শিল্পকলা প্রীতি থেকে সেইসময়ের ভারতের সাংস্কৃতিক দিকটির পরিচয় মেলে। বিশেষ করে শাহজাহানের আমলের স্থাপত্য শিল্প থেকে শিল্পকলায় মুঘলদের রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়।
মূল্যায়ন
মুঘল যুগ মধ্যযুগের সাহিত্য ও ইতিহাসচর্চার স্বর্ণযুগ। এযুগের প্রতিটি ঘটনা সংরক্ষিত থাকায় ইতিহাসের উপাদান পাওয়া সহজ হয়েছে।
আবার একথা সত্যি যে বহু উপাদান প্রাকৃতিক প্রভাব ও অবহেলায় নষ্ট হয়েছে।
তবুও যেটুকু অবশিষ্ট আছে তা দিয়েই মুঘল ভারতের আর্থ-সামাজিক, ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক জীবনের উজ্জ্বল চিত্র পাওয়া গেছে।
আসলে প্রত্নবস্তু সেই অর্থে না থাকায় সাহিত্যই মুঘল ইতিহাস রচনার নির্ভরযোগ্য উপাদান।
তাই এই সাহিত্য গ্র্রন্থগুলিকে ভালো করে উপলব্ধি করলে মুঘল যুগের ইতিহাসের উপাদানের সহজেই সন্ধান মেলে।
আরও পড়ুন : ভগৎ সিং স্মরণীয় কেন
আশা করি ‘মুঘল যুগের ইতিহাসের উপাদান’ পোস্টটি পড়ে অনেক তথ্য তোমরা জানতে পেরেছো। যদি পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে তোমাদের মতামত জানিও। আর পোস্টটি অবশ্যই শেয়ার কোরো। তোমাদের মূল্যবান মতামত থেকে খুব অনুপ্রেরণা পাই। ভালো থেকো তোমরা বনধুরা।