জ্যাকোবিন দল (The Jacobins)
নমস্কার বন্ধু কেমন আছো, আশা করি খুব ভালো আছো। এবারের পোস্টটি ফরাসি বিপ্লবের জ্যাকোবিন দল সম্পর্কে করা হচ্ছে।
জ্যাকোবিন দল সম্পর্কে যদি না জানো তাহলে এই পোস্টটি থেকে জেনে নাও।
আগের পোস্টটি শের শাহের শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে করা হয়েছে। যদি এই পোস্টটি না পড়ে থাকো তাহলে অবশ্যই পড়ে নিও।
জ্যাকোবিন কারা :
ফ্রান্সের জাতীয় সভা আহ্বানের পর ফ্রান্সে বহু রাজনৈতিক গোষ্ঠী গড়ে উঠেছিল।
এইভাবে ফ্রান্সের ব্রিটানী প্রদেশের সদস্যরাও ‘ সংবিধান সমর্থক সমিতি ‘ নামে একটি গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছিল। গোষ্ঠীটির চলতি নাম ছিল ব্রেটন ক্লাব বা ব্রেটন দল।
ক্লাবটির সদস্যরা তাঁদের সভার জন্য জ্যাকোবিন নামে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের গীর্জা ঘর ভাড়া নেয়।
যেহেতু জ্যাকোবিন গীর্জায় ব্রেটন দলের সভা অনুষ্ঠিত হত তাই জনসাধারণ এই দলটিকে ‘জ্যাকোবিন দল‘ বলে আখ্যায়িত করে।
জ্যাকোবিন দলের প্রতিষ্ঠাকাল ও প্রতিষ্ঠাতা :
জ্যাকোবিন দল ফ্রান্সে গড়ে উঠেছিল ১৭৮৯ খ্রীষ্টাব্দে। জ্যাকোবিন দলের নেতা ও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ম্যাক্সিমিলিয়েন রোবসপিয়ের।
জ্যাকোবিন দলের আদর্শ :
রোবসপিয়ের ও তাঁর দলের সদস্যরা রুশোর প্রচারিত আদর্শ মেনে চলত। অর্থাৎ সাম্য, রাজনৈতিক ও সামাজিক আদর্শ।
এই আদর্শকে পাথেয় করে জ্যাকোবিন দল নিম্নবিত্ত লোক যেমন, পাতি বুর্জোয়া, কারিগর, দোকানদার, কৃষকদের কথা ভাবত।
তাই বলা যেতে পারে যে জ্যাকোবিনদের লক্ষ্য ছিল সমাজতন্ত্র ঘেঁষা।
আরও পড়ো : ফ্রান্সের সন্ত্রাসের রাজত্ব
জ্যাকোবিন দলের চরিত্র :
ঐতিহাসিক লেফেভারের মতে জ্যাকোবিনরা বুর্জোয়া শ্রেণীরই সমর্থক ছিল। কারণ তাঁরা সম্পত্তির অধিকার লোপ করা বা সম্পত্তির বন্টনের কথা ভাবেনি।
সন্ত্রাসের রাজত্বের সময়ে জ্যাকোবিনরাই সাধারণ মানুষদের তুলনায় বেশি কর দিয়েছিল।
তাই অধিকাংশ ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে, জ্যাকোবিনরা আইনসভায় স্বীকৃতি পাওয়ার জন্যই দরিদ্রের বন্ধু হয়েছিল।
এক্ষেত্রে তাঁরা প্রখর বাস্তববুদ্ধির পরিচয় দিয়েছিল। তাই তাঁদের চরিত্র সমাজতান্ত্রিক না বলে বুর্জোয়াতান্ত্রিকই বলা যায়।
জ্যাকোবিনদের সংস্কারগুলি :
জ্যাকোবিনরা ফ্রান্সের মধ্যে প্রতিবিপ্লব দমন করেছিল সন্ত্রাসের রাজত্বের মাধ্যমে।
বৈদেশিক যুদ্ধকেও তাঁরা সাফল্যের সাথে প্রতিহত করেছিল।
দ্রব্যের সর্বোচ্চ মূল্য, সর্বনিম্ন মজুরী আইন, বাজেয়াপ্ত করা জমির বণ্টন, প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার, মুনাফা বিরোধী আইন প্রভৃতি সংস্কারের দ্বারা জ্যাকোবিনরা বিপ্লবকে এগিয়ে দিয়েছিল।
ফরাসি বিপ্লবের বৃহৎ রূপটি জ্যাকোবিনদের চেষ্টাতেই সম্ভব হয়েছিল।
জ্যাকোবিনদের পতন :
জ্যাকোবিনদের দ্বারাই ফ্রান্সে সন্ত্রাসের রাজত্ব চলেছিল। সন্ত্রাসের রাজত্বের ভয়াবহতা এতটাই বেশী ছিল যে জ্যাকোবিনদের জনপ্রিয়তা নষ্ট হয়।
লোভ, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব জ্যাকোবিনদের ভাবমূর্তি খারাপ করেছিল।
তার সাথে যুক্ত হয়েছিল গিলোটিনের ব্যবহার।
বহু মানুষকে বিপ্লবের নামে জ্যাকোবিনরা গিলোটিনে হত্যা করে। এমনকি জ্যাকোবিন দলের নেতা রোবসপিয়ের কেও শেষে গিলোটিনেই মারা হয়েছিল।
অবশেষে জ্যাকোবিনদের পতন ঘটে।
আরও পড়ো : ফরাসী বিপ্লবে দার্শনিকদের ভূমিকা
“আশা করি এই পোস্টটি পড়ে তোমার ভালো লেগেছে। যদি তোমার কোনো মতামত থাকে তাহলে তুমি কমেন্ট করে আমাকে জানাতে পারো। তোমার মূল্যবান মতামত আমাকে লিখতে অনুপ্রেরণা জোগাবে। ভালো থেকো বন্ধু , আর ইতিহাস পড়তে থেকো “।
Jirondists
ok,thank you for reading.